Physical Science Class 9Physical Science Class 9

Last Updated on May 23, 2023 by Science Master

নবম শ্রেণীর ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের চতুর্থ অধ্যায় ” জল (Water) ” থেকে সমস্ত রকম প্রশ্মের উত্তর ( Physical Science Class 9) করে দেওয়া হলো। নবম শ্রেণীতে পাঠরত ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বিশেষ কাজে আসবে। ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের প্রশ্ম বিচিত্রা থেকে এই সমস্ত প্রশ্মগুলি সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই নবম শ্রেণীতে পাঠরত ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে খুব কাজে লাগবে। সঠিক উত্তর নির্বাচন, অতিসংক্ষিপ্ত এবং সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্মের উত্তরগুলি করে দেওয়া আছে।

1. নিচের প্রশ্নগুলির সঠিক উত্তর নির্বাচন করো

1) জলে দ্রবীভূত আর্সেনিক যৌগ যে পদ্ধতিতে দূর করা যেতে পারে তা হলো

(a) ফিল্টার

(b) পাতন

(c) কেলাসন

(d) সহ অধঃক্ষেপণ

Ans:- (d) সহ অধঃক্ষেপণ

2) নক মি সিনড্রোম রোগ হয়

(a)ক্যালসিয়ামের অভাবে

(b) আর্সেনিক দূষণের ফলে

(c) ক্লোরাইড দূষণের ফলে

(d) ভিটামিন সি এর অভাবে

3) জলের অস্থায়ী খরতার জন্য দায়ী-

(a) CaCl2

(b) MgCO3

(c) CaCO3

(d) Fe(HCO3)2

Ans:- (d) Fe(HCO3)2

4) জলের খরতা পরিমাপের একক হল-

(a) g.L-1

(b) mol.L-1

(c) ppm

(d) kg.L-1

Ans:- ppm

5) নীচের কোন পদার্থ হ্রাস পাওয়ার ফলে ইউট্রোফিকেশন হয়?

(a) দ্রবীভূত হাড্রোজেন

(b) দ্রবীভূত অক্সিজেন

(c) দ্রবীভূত নাইট্রোজেন

(d) দ্রবীভূত খনিজ লবণ

Ans:- (b) দ্রবীভূত অক্সিজেন

6) আর্সেনিকযুক্ত জল পান করলে যে রোগের সৃষ্টি হয় তা হলো-

(a) মিনামাটা

(b) ব্ল্যাক ফুট ডিজিজ

(c) এটাই- এটাই

(d) ফ্লুরোসিস

Ans:- (b) ব্ল্যাক ফুট ডিজিজ

7) কাগজ শিল্প থেকে নির্গত বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের বর্তমান ধাতু, যা দূষণ ঘটায় তা হল-

(a) লেড

(b) ক্যাডমিয়াম

(c) মার্কারি

(d) আর্সেনিক

Ans:- (c) মার্কারি

8) দাঁতের ক্ষয় করে জলে উপস্থিত-

(a) ফ্লোরাইড

(b) আর্সেনিক

(c) ব্যাকটেরিয়া

(d) ভাইরাস

Ans:- (a) ফ্লোরাইড

9) ডিটারজেন্ট এ উপস্থিত কোন জাতীয় জৈবমূলক জল দূষণ ঘটায় –

(a) ক্লোরাইড

(b) ব্রোমাইড

(c) ফসফেট

(d) সালফেট

Ans:- (c) ফসফেট

10) অস্থায়ী ক্ষরতাকে যদি স্ফুটনের সাহায্যে সম্পন্ন দূর করা না যায় তবে ওই জলে আছে-

(a) ক্যালসিয়াম বাইকার্বনেট

(b) ক্যালসিয়াম কার্বনেট

(c) ফেরাস কার্বনেট

(d) ম্যাগনেসিয়াম বাইকার্বনেট

Ans:- (d) ম্যাগনেসিয়াম বাইকার্বনেট

11) মিনামাটা রোগের কারণ হলো-

(a) জলে ক্যাডমিয়ামের উপস্থিতি

(v) জলে পারদ এর উপস্থিতি

(c) জলে সীসার উপস্থিতি

(d) জলে আর্সেনিকের উপস্থিতি

Ans:- (v) জলে পারদ এর উপস্থিতি

12) বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে জলে যে পদার্থটি মিশ্রিত থাকার ফলে জল দূষণ চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তা হলো

(a) ফ্লোরাইড

(b) আর্সেনিক

(c) লেড যৌগ

(d) মার্কারি যৌগ

Ans:- (b) আর্সেনিক

13) জলের স্থায়ী ও অস্থায়ী খরতা একই সঙ্গে দূর করা যায়-

(a) স্ফুটন পদ্ধতিতে

(b) ক্লোরিনেশন পদ্ধতিতে

(c) আতিবেগুনি রশ্মির সাহায্যে

(d) আয়ন বিনিময় পদ্ধতিতে

Ans:- (d) আয়ন বিনিময় পদ্ধতিতে

14) WHO এর নির্দেশিকা অনুযায়ী পানীয় জলে দ্রবীভূত আর্সেনিকের সর্বোচ্চ সহনশীল মাত্রা হল

(a) 0.005 mg/L

(b) 0.5 mg/L

(c) 0.25 mg/L

(d) 0.525 mg/L

Ans:- (a) 0.005 mg/L

[ আরও দেখুনঃ নবম শ্রেণীর ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্ম-উত্তর।]

2. নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির অতিসংক্ষিপ্ত উত্তর দাও

1) জলের কোন নমুনায় CaCl2 মিশ্রিত থাকলে সেই জলের খরতা কোন ধরনের হবে?

Ans:- জলের নমুনায় ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড মিশ্রিত থাকলে সেই জলের খরতাকে স্থায়ী খরতা বলে।

2) জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ হ্রাসের একটি কারণ উল্লেখ করো।

Ans:- জল দূষণের ফলে জলাশয়ে উপস্থিত শৈবালের কালক্রমে মারা যাওয়ার কারণে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ হ্রাস পায়।

3) ভৌম জলে ফ্লোরাইড এর আধিক্যের জন্য সৃষ্ট হয় এমন একটি শারীরিক ক্ষতির উল্লেখ করো।

Ans:- ভৌম জলে ফ্লোরাইড এর আধিক্যের জন্য ফ্লুরোসিস রোগ হয়। এ রোগে আক্রান্ত হলে হাড় ও দাঁত ভঙ্গুর হয়, স্নায়ু ও পেশীকলার স্বাভাবিক কার্যকারিতা কমে যায়।

4) পানীয় জল প্রস্তুতির একটি পদ্ধতির নাম লেখো।

Ans:- বিপরীত অভিস্রবণ।

5) ভৌমজলের নির্ধারিত আর্সেনিকের সর্বোচ্চ মাত্রা কত ?

Ans:- WHO এর মতে প্রতি লিটার পানীয় জলে আর্সেনিকের নিরাপদ মাত্রা হল 0.02 মিলিগ্রাম বা 0.02 ppm

7) জলে আর্সেনিক দূষণের কারণ গুলি লেখ

Ans:- জলে আর্সেনিক দূষণ প্রাকৃতিক এবং মনুষ্যসৃষ্ট উভয় কারনেই ঘটে।

প্রাকৃতিক কারণঃ পাললিক শিলাস্তর থেকে আর্সেনাইট ও আর্সেনেট যৌগ হিসেবে ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিক মিশে যায়। ফলে জলে আর্সেনিক দূষণ ঘটে।

মনুষ্যসৃষ্ট কারণঃ বিভিন্ন রকম রাসায়নিক সার, কীটনাশক ও পেস্টনাশকের ব্যবহারের ফলেও জলে আর্সেনিক দূষণ ঘটে।

6) কলিফর্ম কাউন্ট কি?

Ans:-কলিফর্ম কাউন্ট জল সংক্রমণের একটি পরীক্ষা যার সাহায্যে প্রতি ১০০ মিলিলিটারে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া এসচেরিশিয়া কলাই (E.coli) এর আবাসন সংখ্যা গণনা করা যায়।

8) জলে কোন কোন লবণ দ্রবীভূত থাকলে স্থায়ী খরতা এবং অস্থায়ী খরতার সৃষ্টি হয়?

Ans:- জলে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম এর ক্লোরাইড ও সালফেট লবণ দ্রবীভূত থাকলে সেই ধরনের জলে স্থায়ী খরতা সৃষ্টি হয়।

জলে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম বা আয়রনের বাইকার্বনেট লবণ দ্রবীভূত থাকলে সেই ধরনের জলে অস্থায়ী খরতা সৃষ্টি হয়।

9) জলের স্থায়ী ও অস্থায়ী খরতা দূর করা যায় ফুটন প্রক্রিয়ার সাহায্যে (সত্য/ মিথ্যা লেখ)

Ans:- মিথ্যা।

10) ব্লু বেবি সিনড্রোম (Blue Baby Syndrome) কি কারনে হয়?

Ans:- জলে নাইট্রেট দূষণের ফলে ব্লু বেবি সিনড্রোম (Blue Baby Syndrome) রোগ হয়।

11) পানীয় জলের কলিফর্ম কাউন্ট কত হওয়া উচিত?

Ans:- কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের নির্ধারিত মান অনুযায়ী 100 মিলিলিটার জলে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা হবে 500 টি।

12) পানীয় জলে আর্সেনিক থাকলে কী রোগ হয়?

Ans:- ব্ল্যাক ফুট ডিজিজ।

13) ক্যারাটোসিস রোগের জন্য______দায়ী ।( শূন্যস্থান পূরণ করো)

Ans:- আর্সেনিক।

14) জলের যে সব ধর্ম প্রাণের বিকাশের পথে গুরুত্বপূর্ণ সেই রকম দুটি বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করো।

Ans:- বেঁচে থাকার প্রধান উপাদান হল জল। প্রাণের বিকাশ ও প্রাণ ধারনের জন্য জল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জলের এই যে বিশেষ ভূমিকা তা জলের কিছু ভৌত ধর্মের উপর নির্ভরশীল। ভৌতধর্ম গুলি হল- ১) জলের আপেক্ষিক তাপ ২) উচ্চ স্ফূটনাঙ্ক ৩) কৈশিক ক্রিয়া ৪) দ্রাবক ধর্ম।

15) জলের খরতা দূরীকরণের দুটি পদ্ধতির নাম লেখো।

Ans:- জলের খরতা দূরীকরণের দুটি পদ্ধতি হল- ১) স্ফুটন পদ্ধতি ২) আয়ন বিনিময় পদ্ধতি।

16) ইউট্রোফিকেশন ও আলগাল ব্লুম কাকে বলে?

Ans:- আলগাল ব্লুমঃ দুষিত জলে আবর্জনা, নাইট্রেট ও ফসফেট সার, ডিটারজেন্টের সাথে বিভিন্ন লবণ মিশ্রিত থাকলে জলাশয় উপস্থিত শৈবালের বৃদ্ধি অতি দ্রুত হাড়ে সংগঠিত হয়। এই ঘটনাকে আলগাল ব্লুম বলা হয়।

ইউট্রোফিকেশনঃ জলাশয়ে উপস্থিত শৈবাল গুলি কালক্রমে মারা যায়। এগুলিকে বিয়োজিত করার জন্য সবাত বিয়োজকগুলি সক্রিয় হয়ে ওঠে । এর ফলে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন দ্রুত হারে কমে যায়। দ্রবীভূত অক্সিজেন না থাকার ফলে মাছ সহ সমস্ত জলজ প্রাণী মারা যায়। এই ঘটনাকে ইউট্রোফিকেশন বলা হয়।

17) কোন পদ্ধতিতে জলের স্থায়ী ও অস্থায়ী খরতা একসঙ্গে দূর করা যায়?

Ans:- আয়ন বিনিময় বা রেজিন পদ্ধতি।

18) BOD এর পুরো কথাটি কি?

Ans:- বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেন ডিমাণ্ড (BOD)।

19) জলে কোন কোন লবণ উপস্থিত থাকলে জল খর হয় না?

Ans:- জলে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম লবণ দ্রবীভূত থাকলে জল খর হয় না।

20) আর্সেনিকোসিস রোগ কেন হয়?

Ans:- দীর্ঘদিন আর্সেনিক যুক্ত জল পান করলে আর্সেনিকোসিস রোগ হয়।

21) ডিটারজেন্ট খর জলেও ফেনা উৎপন্ন করতে পারে।( সত্য /মিথ্যা লেখ)

Ans:- মিথ্যা।

3. নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাওঃ

1) জলের স্থায়ী খরতা দূর করার রেজিন কিছুদিন ব্যবহার করার পর তার ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করা যায় কিভাবে

2) কোন অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ভৌমজ্জ্বল পান করার ফলে তাদের পায়ে কালো কালো ছোপ হতে দেখা গেল। পানীয় জলের বিষয়ে তুমি তাদের কি পরামর্শ দেবে

3) দুটি পদ্ধতির নাম লেখ যার দ্বারা জলের খরতা দূর করা যায়?

Ans:- স্ফুটন পদ্ধতি এবং আয়ন বিনিময় রেজিন পদ্ধতি।

4) আর্সেনিক দূষণ নিয়ন্ত্রণের উপায় কি কি ?

Ans:- (ক) আর্সেনিক দুষিত অঞ্চলে মানুষের কাছে আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জল সরবরাহ করতে হবে। (খ) আর্সেনিক দুষিত অঞ্চলের জল থেকে আর্সেনিক অপসারণ করতে হবে। আর্সেনিক অপসারণ মোটামুটি চারটি পদ্ধতিতে করা হয়। (১) সহঃঅধক্ষেপণ (২) অধিশোষন (৩) আয়ন-বিনিময় (৪) বিপরীত অভিস্রবণ।

5) জল দূষণের বিভিন্ন কারণ লেখ।

Ans:- জল দূষণের বিভিন্ন কারণগুলি কারণ নিচে দেওয়া হলো।

(ক) খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, ডেয়ারি ফার্ম, পোল্ট্রি ফার্ম, অ্যালকোহল তৈরির কারখানা প্রভৃতি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জৈব বর্জ্যপদার্থ এবং গৃহস্থ বাড়ির জৈব পদার্থ নর্দমার জলের সাথে মিশে জলাশয়ের জলে এসে জলকে দূষিত করে।

(খ) পেপার মিল, পেট্রোলিয়াম শোধনাগার প্রভৃতি বৃহৎ শিল্পের কারখানা থেকে নির্গত প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ক্ষতিকারক পদার্থ নদীসহ বিভিন্ন বৃহৎ জলাশয়ে ফেলা হয়। এইসব বর্জ্যপদার্থের উপস্থিতির কারণে জল দূষণ ঘটে।

(গ) গৃহস্থ বাড়ি এবং কোনো কোনো কারখানা থেকে সাবান ও ডিটারজেন্ট মিশ্রিত জল জলশায়ের জলে মেশে, ফলে জল দূষণ ঘটে।

(ঘ) খাদ্যশস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য কৃষি ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিমাণে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহারের ফলেও জল দূষণ ঘটে।

6) ইউট্রোফিকেশন কি? আলগাল ব্লুম কি?

Ans:- আলগাল ব্লুম (Algal Bloom): দুষিত জলে আবর্জনা, নাইট্রেট ও ফসফেট স্যার, ডিটারজেন্টের সাথে বিভিন্ন লবণ মিশ্রিত থাকলে জলাশয় উপস্থিত শৈবালের বৃদ্ধি অতি দ্রুত হারে সংগঠিত হয়। এই ঘটনাকে আলগাল ব্লুম বলা হয়।

ইউট্রোফিকেশন (Eutrofication) কিঃ শৈবাল গুলি কালো ক্রমে মারা যায়। এগুলিকে বিয়োজিত করার জন্য সবাত বিয়োজকগুলি সক্রিয় হয়ে ওঠে। এর ফলে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন দ্রুত হারে কমে যায়। দ্রবীভূত অক্সিজেন না থাকার ফলে মাছ সহ সমস্ত জলজ প্রাণী মারা যায়। এই ঘটনাকে ইউট্রোফিকেশন বলা হয়।

7) জলে ম্যাগনেসিয়াম বাইকার্বনেট দ্রবীভূত থাকলে তাকে স্ফুটন পদ্ধতিতে মৃদু জলে পরিণত করা যায় না কেন?

Ans:- জলে ম্যাগনেসিয়াম বাই কার্বনের দ্রবীভূত থাকার ফলে যে অস্থায়ী খরতার সৃষ্টি হয় তা স্ফুটন পদ্ধতিতে মৃদু জলে পরিণত করা যায় না। কারণ এই জলকে ফোটালে দ্রবীভূত ম্যাগনেসিয়াম বাইকার্বনেট লবণ ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট লবনে পরিণত হয়। আর এই কার্বনেট লবণ জলে সামান্য পরিমাণে দ্রাব্য হওয়ায় স্ফুটন পদ্ধতির সাহায্যে এই কার্বনেট লবণ দূরীভূত করা যায় না।

8) অতি বেগুনি রশ্মি দ্বারা জল পরিশোধনের দুটি সীমাবদ্ধতা লেখ

9) স্ফুটনের সাহায্যে কিভাবে জলের অস্থায়ী খরতা দূর করা যায়?

Ans:- জলের মধ্যে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রনের বাই কার্বনেট লবণ দ্রবীভূত থাকলে সেই জলের খরতাকে অস্থায়ী খরতা বলে। স্ফুটন প্রক্রিয়ার সাহায্যে অস্থায়ী খরতা দূরীকরণ করা যায়। এই অস্থায়ী খর জলকে ফোটালে দ্রবীভূত বাইকার্বনেট লবণ গুলি অদ্রাব্য কার্বনেট লবণে পরিণত হয়ে অধঃক্ষিপ্ত হয় এবং কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হয়। পরে এই জলকে ছেঁকে নিলে জলের খরতা দূর হয় এবং মৃদু জল পাওয়া যায়।

10) বয়লারে খর জল ব্যবহার করা যায় না কেন?

Ans:- বয়লারে স্টিম উৎপন্ন করতে খরজল ব্যবহার করা হয় না। বয়লারে খর জল নিয়ে ফোটালে খর জলে দ্রবীভূত কঠিন পদার্থ বয়লারের গায়ে একটি অদ্রাব্য আস্তরণ সৃষ্টি করে। এই আস্তরণ তাপের কুপরিবাহী। এই আস্তরণ সিলিকা (SiO2), আয়রন অক্সাইড (Fe2O3), অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড (Al2O3), ক্যালসিয়াম কার্বনেট (CaCO3), ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড (MgO), ক্যালসিয়াম সালফেট (CaSO4) ও ম্যাগনেসিয়াম সালফেট (MgSO4) দিয়ে গঠিত। এই আস্তরণ তাপের কুপরিবাহী হওয়ায় বয়লারকে আরও উচ্চ তাপে উত্তপ্ত করতে হয় ফলে বয়লারের স্থায়িত্ব কমে যায়।

11) খরো জলে সাবান ঘষলে সহজে ফেনা তৈরি হয় না কেন?

Ans:- সাধারণত প্রাকৃতিক জলের মধ্যে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের বাই কার্বনেট, ক্লোরাইড ও সালফেট লবণ দ্রবীভূত থাকার ফলে জল খর হয়. আর সাধারণ সাবান হলো স্টিয়ারিক, পামিটিক, ওলেয়িক প্রভৃতি উচ্চ আণবিক ভরবিশিষ্ট জৈব ফ্যাটি অ্যাসিডের সোডিয়াম লবণ। এই লবণগুলি জলে দ্রবীভূত হয়ে ফেনা সৃষ্টি করে। কিন্তু এইসব অ্যাসিডের ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম লবণগুলি জলে অদ্রব্য বলে সাদা সর উৎপন্ন হয়, ফেনা উৎপন্ন হয় না।

12) স্থায়ী খরতা দূরীকরণে ক্যাটায়ন বিনিময়কারী রেজিনের কার্য পদ্ধতি লেখো।

Ans:- স্থায়ী খরতা দূরীকরণের সময় খর জলকে পরপর দুটি ট্যাঙ্কের ভেতর দিয়ে পাঠানো হয়। প্রথম ট্যাংকের কিছু অংশ ক্যাটায়ন বিনিময়কারী রেজিন এবং দ্বিতীয় ট্যাংকের কিছু অংশ অ্যানায়ন বিনিময় কারীদের ছোট ছোট দানার দ্বারা পূর্ণ করা থাকে। প্রথমে ক্যাটায়ন বিনিময়কারী রেজিনের ভেতর দিয়ে চালনা করা হয় । এর ফলে খরজলে উপস্থিত Na+, Ca2+, Ng2+, Fe2+ প্রভৃতি সমস্ত ক্যাটায়ন রেজিনের H+ আয়নের সঙ্গে স্থান বিনিময় করে এবং রেজিনের গঠনে আবদ্ধ হয়। এভাবে জল সমস্ত ধাত আয়ন থেকে মুক্ত হয় কিন্তু এর মধ্যে ক্যাটায়ন হিসেবে শুধুমাত্র H+ আয়ন এবং অ্যানায়ন হিসেবে Cl, SO42-, HCO3 প্রভৃতি থেকে যায়।

2R-H+ + CaCl2 ⟶ R2Ca + 2H+ + 2Cl ; 2R-H+ + MgSO4 ⟶ R2Mg + 2H+ + SO42-

13) সক্রিয়তাহীন ক্যাটায়ন ও অ্যানায়ন বিনিময়কারী রেজিন এর কর্মদক্ষতা কিভাবে ফিরে পাওয়া যায়?

Ans:- ক্যাটায়ন ও অ্যানায়ন বিনিময়কারী রেজিনে আয়ন যুক্ত হওয়ার ঘটনাটি উভঙ্খী এজন্য দীর্ঘ সময় রেজেন্ট ব্যবহার করার ফলে যখন রেজেনের কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় তখন এই রেজিনগুলিকে পুনরোজ্জীবিত করা যায়।

১) ক্যাটায়ন বিনিময়কারী রেজিনের ভেতর দিয়ে মাঝারি গারত্বের সালফিউরিক অ্যাসিড বা হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড দ্রবণ পাঠিয়ে রেজিন পুনরুজ্জীবিত করা হয়।

R2Ca + 2HCl ⟶ 2R-H+ + CaCl2; R2Mg +H2SO4 ⟶ 2R-H+ + MgSO4

২) অ্যানায়ন বিনিময়কারী রেজিনের ভেতর দিয়ে মাঝারি গারত্বের সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড দ্রবণ পাঠিয়ে রেজিন পুনরুজ্জীবিত করা হয়।

R-N+H3Cl + Na+OH ⟶ RN+H3OH + Na+ + Cl;

(R-N+H3)2SO4 + 2Na+OH ⟶ 2R-N+H3OH + 2Na+ + SO42-

14) জলের স্থায়ী খরতা কাকে বলে? এই খরতা দূরীকরণের একটি পদ্ধতির নাম লেখো।

Ans:- প্রাকৃতিক জলে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের ক্লোরাইড ও সালফেট লবণ দ্রবীভূত থাকলে ফুটনের মতো সহজ পদ্ধতিতে জলের খরতা দূর করা যায় না। এই ধরনের খরতাকে জলের স্থায়ী খরতা বলা হয়। আর এই ধরনের খর জলকে স্থায়ী খরাজল বলা হয়। আয়ন বিনিময় বা রেজিন পদ্ধতির সাহায্যে স্থায়ী খরতা দূরীকরণ করা হয়।

15) জলের স্থায়ী খরতা দূরীকরণে ক্যাটায়ন বিনিময়কারী রেজিনকে কিভাবে পুনরায় ব্যবহার করা যায়?

Ans:- জলের স্থায়ী খরতা দূরীকরণে ক্যাটায়ন বিনিময়কারী রেজিনকে পুনরায় ব্যবহার করার জন্য ক্যাটায়ন বিনিময়কারী রেজিনের ভেতর দিয়ে মাঝারি গারত্বের সালফিউরিক অ্যাসিড বা হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড দ্রবণ পাঠিয়ে রেজিন পুনরুজ্জীবিত করা হয়।

R2Ca + 2HCl ⟶ 2R-H+ + CaCl2; R2Mg +H2SO4 ⟶ 2R-H+ + MgSO4

16) জলকে সার্বজনীন দ্রাবক বলা হয় কেন?

Ans:- বহু কঠিন, তরল এবং গ্যাসীয় পদার্থ জলে দ্রবীভূত হয়। কয়েকটি বিশেষ গুণাবলীর জন্য জল দ্রাবক হিসেবে সার্বজনীন। গুনগুলি হল- (ক) জলের দ্রাবক শক্তি বেশি (খ) জলের অন্য যৌগের সঙ্গে হাইড্রোজেন বন্ধন করার ক্ষমতা আছে (গ) কয়েকটি যৌগের সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া করার ক্ষমতা আছে (ঘ) জল 0oC থেকে 100oC তাপমাত্রা পর্যন্ত তরল অবস্থায় থাকে।

17) WHO নির্দেশিত পানীয় জলের বিভিন্ন মানগুলির নাম সর্বোচ্চ পরিমাণ সহ উল্লেখ করো।

18) ক্যালসিয়াম বাইকার্বনেট জনিত অস্থায়ী খরতা স্ফুটন পদ্ধতিতে দূর করা যায় না কেন?

Ans:- ক্যালসিয়াম বাইকার্বনেট জনিত অস্থায়ী খরতা স্ফুটন পদ্ধতিতে দূর করার সময়, অস্থায়ী খর জলকে ফোটালে ক্যালসিয়াম বাইকার্বনেট লবণ ক্যালসিয়াম কার্বনেট লবণে পরিণত হয়। উৎপন্ন ক্যালসিয়াম কার্বনেট লবণ সম্পূর্ণরূপে অধঃক্ষিপ্ত হয় না । জলে সামান্য পরিমাণে দ্রবীভূত থাকে। তাই স্ফুটন পদ্ধতিতে ক্যালসিয়াম বাইকার্বনেট জনিত অস্থায়ী খরতা দূর করা যায় না।

19) জলের খরতা কয় প্রকার ও কী কী? খরতা সৃষ্টিকারী দুটি লবণের নাম লেখো।

Ans:- জলের খরতা সাধারণত দুই প্রকার স্থায়ী খরতা এবং অস্থায়ী খরতা। খরতা সৃষ্টিকারী দুটি লবণ হলো ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড (CaCl2) এবং ম্যাগনেসিয়াম সালফেট (MgSO4)।

20) জলদূষণ কাকে বলে? জলদূষণ সৃষ্টিকারী দুটি উপাদানের নাম লেখো।

Ans:- জলের কোন অংশে কাদা মাটি রাসায়নিক দ্রব্য কীটনাশক জীবাণু প্রভৃতি বহিরাগত কোন পদার্থ নেশার ফলে যদি তার ভৌত রাসায়নিক ও জৈবিক পরিবর্তন ঘটে যার ফলে মানুষ সহ সমস্ত জীবের ব্যবহারের অনুপযোগী হয় এবং তাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয় তবে সেই জলকে দূষিত জল বলা হয় এবং এই ঘটনাকে জল দূষণ বলা হয়। জল দূষণ সৃষ্টিকারী উপাদান হল কীটনাশক, পেস্টনাশক, ডিটারজেন্ট, তেজস্ক্রিয় বর্জ্য পদার্থ ইত্যাদি।

21) জলের স্থায়ী খরতা দূরীকরণে আয়ন বিনিময় পদ্ধতি বর্ণনা করো।

Ans:- জলের স্থায়ী খরতা দূরীকরণে সাধারণত আয়ন বিনিময় পদ্ধতি বা রেজিন পদ্ধতি হল গুরুত্বপূর্ণ। নিচে আয়ন বিনিময় বা রেজিন পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।

রেজিন পদ্ধতিতে জলের খরতা দূরীকরণ করার ক্ষমতা অনেক বেশি। রেজিন এক প্রকার কৃত্রিম উপায়ে প্রাপ্ত জৈব যৌগ। এই যৌগে সালফনিক অ্যাসিড মূলক (SO3H) থাকে । কঠিন দানা আকারের এই রেজিন গুলির ওপর দিয়ে NaCl দ্রবণ প্রবাহিত করালে রেজেনের H+ আয়ন Na+ আয়ন দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয় এবং রেজিনের সোডিয়াম লবণ উৎপন্ন করে। এই সোডিয়াম যুক্ত রেজিন খর জলের Ca2+, Mg2+, Fe2+ আয়ন গুলির সঙ্গে আয়ন বিনিময় ঘটিয়ে জলের খরতা দূর করে এবং খর জল মৃদু জলে পরিণত হয়।

2RSO3Na (রেজিনের Na লবণ) + CaCl2 = (RSO3)2Ca (অদ্রাব্য) + 2NaCl

2RSO3Na (রেজিনের Na লবণ) + MgSO4 = (RSO3)2Mg (অদ্রাব্য) + 2Na2SO4

22) পানীয় জলের দুটি গুণাবলী লেখ।

Ans:- পানীয় জলে কতগুলি বিশেষ গুণাবলী থাকা প্রয়োজন, সেগুলি হল- (ক) পানীয় জল জীবাণুমুক্ত, স্বচ্ছ ও সুস্বাদু হওয়া প্রয়োজন। (খ) ক্ষতিকারক জৈব ও অজৈব লবণ মুক্ত হতে হবে। উল্লেখযোগ্য হলো ক্রোমিয়াম, লেড, ফেনল, কীটনাশক পদার্থ থেকে মুক্ত হতে হবে। (গ) জলের pH কে একটি নির্দিষ্ট মাত্রা 6.0 থেকে 9.0 পর্যন্ত থাকতে হবে।

23) জলের খরতার কারণ কি ? নলকূপের জলের খরতা 3 ppm বলতে কী বোঝায়?

Ans:- সাধারণত প্রাকৃতিক জলের মধ্যে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের বাই কার্বনেট, ক্লোরাইড ও সালফেট লবণ দ্রবীভূত থাকার ফলে জল খর হয়। নলকূপের জলের খরতা 3 ppm বলতে বোঝায়, নলকূপের প্রতি 10 লক্ষ ভাগ ভরের জলে 3 gm CaCO3 দ্রবীভূত আছে।

আমাদের পোষ্টের লেটেস্ট আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ জয়েন করুন এবং টেলিগ্রাম চ্যানেল জয়েন করুন।

google news

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: