Last Updated on November 1, 2022 by Science Master
জীব-অণুসমূহ (Biomolecules)
রসায়নের যে শাখায় সজীব বস্তুর সংযুক্তি, গঠন এবং সজীব বস্তুতে সংঘটিত বিভিন্ন রাসায়নিক পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করা হয়, তাকে প্রাণরসায়ন (Biochemistry) বলে। আর যেসব জটিল রাসায়নিক যৌগ জীবনের ভিত্তি বা বুনিয়াদ গঠন করে, অর্থাৎ যারা শুধুমাত্র সজীব বস্তু গঠন করে না, তাদের বৃদ্ধি, বেঁচে থাকা এবং বংশবৃদ্ধির জন্যেও দায়ী তাদের জীব-অণু (Biomolecules) বলে। এই জটিল জীব-অণুগুলি হল কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, এনজাইম, লিপিড, নিউক্লিক অ্যাসিড, হরমোন, ভিটামিন ইত্যাদি।
কার্বোহাইড্রেট (Carbohydrates)
1. একটি ডাইস্যাকারাইড ও একটি পলিস্যাকারাইডের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ- ডাইস্যাকারাইডের উদাহরণ- সুক্রোজ, ল্যাকটোজ, মলটোজ।
পলিস্যাকারাইডের উদাহরণ- স্টার্চ, সেলুলোজ।
2. বিজারক ও অবিজারক শর্করা কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ- বিজারক শর্করা- যেসব কার্বোহাইড্রেট ফেলিং দ্রবন বা টোলেন্স বিকারককে বিজারিত করতে পারে তাদের বিজারক শর্করা বলে। যেমন- রাইবোজ, গ্লূকোজ, ফ্রূক্টোজ, ল্যাকটজ, মলটোজ,
অবিজারক শর্করা- যেসব কার্বোহাইড্রেট ফেলিং দ্রবন বা টোলেন্স বিকারককে বিজারিত করতে পারে না তাদের বিজারক শর্করা বলে। যেমন- সুক্রোজ, স্টার্চ, সেলুলোজ।
3. গ্লূকোজকে কীভাবে গ্লূকোসাজোনে পরিণত করা যায়?
উত্তরঃ- গ্লূকোজকে অতিরিক্ত ফিনাইল হাইড্রাজিন সহযোগে উত্তপ্ত করলে গ্লূকোসাজোন উৎপন্ন হয়।
4. গ্লূকোজকে ব্রোমিন জল সহযোগে বিক্রিয়া ঘটালে কী ঘটে।
উত্তরঃ- গ্লূকোজের সঙ্গে ব্রোমিন জলের বিক্রিয়ায় গ্লূকোনিক অ্যাসিড উৎপন্ন হয়।
5. মিউটারোটেশন বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ- কোনো আলোক সক্রিয় যৌগকে উপযুক্ত দ্রাবকে দ্রবীভূত করলে যদি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দ্রবণের আপেক্ষিক আবর্তনের মানের পরিবর্তন ঘটে এবং শেষ পর্যন্ত তা একটি নির্দিষ্ট মানে স্থির হয় তাহলে ওই ঘটনাকে মিউটারোটেশন বলে।
6. পলিস্যাকারাইড কী? উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ- যেসব কার্বোহাইড্রেট অণুর আর্দ্রবিশ্লেষনের ফলে বহু সংখ্যাক মনোস্যাকারাইড অণু উৎপন্ন হয়, তাদের পলিস্যাকারাইড বলে। যেমন- স্টার্চ, সেলুলোজ।
7. গ্লাইকোসাইডিক লিঙ্কেজ বলতে কি বোঝ?
উত্তরঃ- দুটি মনোস্যাকারাইড একক এর মধ্যে অক্সিজেন পরমানুর সাহায্যে যে বন্ধন গঠিত তাকে গ্লাইকোসাইডিক লিঙ্কেজ বলে।
8. গ্লূকোজকে Na-Hg/H2O এবং গাড় HNO3 দ্বারা বিক্রিয়া করালে উৎপন্ন যৌগগুলি লেখো।
উত্তরঃ- গ্লূকোজকে Na-Hg/H2O দ্বারা বিজারিত করলে সরবিটল বা গ্লূসিটল উৎপন্ন হয় ।
গাড় HNO3 দ্বারা জারিত করলে গ্লূকারিক অ্যাসিড বা স্যাকারিক অ্যাসিড উৎপন্ন হয়।
9. গ্লূকোজের মিউটারোটেশনের কারন কী?
উত্তরঃ- D- গ্লূকোজ দুটি স্টিরিওআইসোমার রূপে অবস্থান করে। ∝-D- গ্লূকোজ এবং β-D- গ্লূকোজ। ∝ বা β-D- গ্লূকোজ জলে দ্রবীভূত করলে একটি গতিশীল সাম্যবস্থা সৃষ্টি করে। সাধারণ উষ্ণতায় সাম্য মিশ্রণে 36% ∝-D- গ্লূকোজ (আপেক্ষিক আবর্তনের মান +112o) এবং 64% β-D- গ্লূকোজ (আপেক্ষিক আবর্তনের মান+19o) থাকে। তাই ∝-D- গ্লূকোজের ক্ষেত্রে আপেক্ষিক আবর্তনের মান হ্রাস পায় কিন্তু β-D- গ্লূকোজের ক্ষেত্রে আপেক্ষিক আবর্তনের মান বৃদ্ধি পায়।
10. গ্লূকোজকে HIO4 দ্বারা বিক্রিয়া ঘটালে কী ঘটে।
উত্তরঃ- গ্লূকোজের সঙ্গে HIO4 বিক্রিয়ায় এক অণু ফর্মালডিহাইড এবং পাঁচ অণু ফরমিক অ্যাসিড উৎপন্ন হয়।
11. একটি করে অ্যালডোপেন্টোজ ও কিটোপেন্টোজের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ- অ্যালডোপেন্টোজঃ রাইবোজ ।
কিটোপেন্টোজঃ রাইবুলোজ ।
12. একটি করে অ্যালডোহেক্সোজ এবং কিটোহেক্সোজের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ- অ্যালডোহেক্সোজঃ গ্লূকোজ ।
কিটোহেক্সোজঃ ফ্রূক্টোজ।
13. গ্লূকোজকে ফেলিং দ্রবনসহ এবং টোলেন্স বিকারকসহ উত্তপ্ত করলে কী ঘটে ।
উত্তরঃ- গ্লূকোজকে ফেলিং দ্রবনসহ উত্তপ্ত করলে গ্লূকোনিক অ্যাসিড ও Cu2O এর লাল অধঃক্ষেপ উৎপন্ন হয়।
C_6H_{12}O_6 +ফেলিং দ্রবন \to HOOC(CHOH)_4CH_2OH + Cu_{2}O
গ্লূকোজকে টোলেন্স বিকারকসহ উত্তপ্ত করলে গ্লূকোনিক অ্যাসিড ও Ag এর ধূসর অধঃক্ষেপ উৎপন্ন হয়।
C_6H_{12}O_6 +টোলেন্স. বিকারক \to HOOC(CHOH)_4CH_2OH + Ag
14. গ্লূকোজ এবং ফ্রূক্টোজের মধ্যে কীভাবে পার্থক্য করবে।
উত্তরঃ- ১) গ্লূকোজ বা ফ্রূক্টোজের জলীয় দ্রবণের মধ্যে 1% ইথানলীয় ∝- ন্যাপথল দ্রবন নিয়ে তাতে গাড় HCl যোগ করে উত্তপ্ত করলে ফ্রূক্টোজের ক্ষেত্রে দ্রুত বেগুনি বর্ণের ফারফিউরাল নামক হেটারোসাইক্লিক যৌগ উৎপন্ন হয়। গ্লূকোজের ক্ষেত্রে এরূপ বেগুনি বর্ণের সৃষ্টি হয় না।
২) (Br2+H2O) হল একটি মৃদু জারক দ্রব্য যার দ্বারা গ্লূকোজ জারিত হয়ে সমসংখ্যক কার্বন পরমানুযুক্ত গ্লূকোনিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে। আবার তীব্র জারক দ্রব্য দ্বারা গ্লূকোজ জারিত হয়ে সমসংখ্যক কার্বন পরমানুযুক্ত গ্লূকারিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে। কিন্তু ফ্রূক্টোজ (Br2+H2O) দ্বারা জারিত হয় না। ফ্রূক্টোজ তীব্র জারক দ্রব্য গাড় নাইট্রিক অ্যাসিড দ্বারা জারিত হয়ে ট্রাইহাইড্রক্সিগ্লূটারিক অ্যাসিড, টারটারিক অ্যাসিড এবং গ্লাইকলিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে।
15.
উত্তরঃ-
[আরও দেখুনঃ প্রত্যহিক জীবনে রসায়ন অধ্যায়ের প্রশ্ম ও উত্তর ]
প্রোটিন (Proteins)
1. অপরিহার্য ও অনপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড বলতে কি বোঝ।
উত্তরঃ- অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিডঃ–
প্রোটিন থেকে প্রাপ্ত দশটি অ্যামিনো অ্যাসিড শরীরে সংশ্লেষিত হয় না, এগুলি খাদ্যের মাধ্যমে গ্রহন করতে হয়। এই অ্যামিনো অ্যাসিড গুলির অভাবে দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে। তাই এই দশটি অ্যামিনো অ্যাসিডকে অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড বলে।
অনপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিডঃ–
জীবদেহে সংশ্লেষিত হয় এমন অ্যামিনো অ্যাসিড গুলিকে অনপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড বলে।
2. পেপটাইড বন্ধন কাকে বলে? অ্যালানিন ও গ্লাইসিন দ্বারা গঠিত পেপটাইড বন্ধন দেখাও।
উত্তরঃ- একই বা ভিন্ন দুটি অ্যামিনো অ্যাসিডের অণু যখন পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হয়, তখন একটির -COOH গ্রুপের সঙ্গে অপরটির -NH2 গ্রুপের বিক্রিয়ায় -CO-NH- বন্ধন সৃষ্টির মাধ্যমে একটি যৌগ সৃষ্টি হয় এবং সেই সঙ্গে এক অণু জল নির্গত হয়। এইভাবে সৃষ্ট -CO-NH- বন্ধনটিকে পেপ্টাইড বন্ধন বলে।
3. প্রোটিনের ডিনেচারেশন কাকে বলে?
উত্তরঃ- উষ্ণতা পরিবর্তনের মতো কোনো ভৌত পরিবর্তন বা pH- পরিবর্তনের মতো কোনো রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটানো হলে বা UV রশ্মির সংস্পর্শে আনলে প্রোটিনের গ্লোবিউল বা হেলিক্স গুলির ভাঁজ বা প্যাঁচ খুলে যায় এবং বর্তুলাকার প্রোটিন তন্তুময় প্রোটিনে পরিণত হয়ে তঞ্চিত হয়। তঞ্চনের ফলে প্রোটিনের আগের গঠনাকৃতি এবং জৈবিক সক্রিয়তা বিনষ্ট হয়। এই ঘটনাকে প্রোটিনের ডিনেচারেশন বলে।
4. প্রোটিনের দুটি জৈবিক কার্যকলাপ সম্পর্কে লেখো।
উত্তরঃ- ১) জীবদেহের কলা গঠনে মুখ্য কাঠামো সৃষ্টিকারী পদার্থ হিসেবে প্রোটিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
২) অ্যান্টিবডি প্রোটিনগুলি শরীরে জীবানু আক্রমণ প্রতিহত করে।
5. প্রোটিনের ∝- হেলিক্স গঠন সম্পর্কে লেখো।
উত্তরঃ- আকারে বড়ো R- গ্রুপ যুক্ত প্রোটিন শৃঙ্খল দক্ষিণ আবর্তিত ∝- হেলিক্স রূপে অবস্থান করে। R- গ্রুপগুলি হেলিক্সের অক্ষ থেকে দূরে প্রসারিত থাকে। অন্তঃআণবিক হাইড্রোজেন বন্ধন গঠনের জন্যেই প্রোটিন অণুশৃঙ্খল এরূপ কনফরমেশন লাভ করে।
6. বার্তুলাকার ও তন্তুময় প্রোটিনের পার্থক্য লেখো।
উত্তরঃ-
বার্তুলাকার | তন্তুময় প্রোটিন |
এই প্রোটিনে পলিপেপটিক শৃঙ্খল কুণ্ডলী পাকিয়ে গোলকাকার ধারন করে। | এই প্রোটিনে পলিপেপটাইড শৃঙ্খল গুলির পাশাপাশি সুতোর মতো তন্তু গঠন দ্বারা অণু সৃষ্টি করে। |
বার্তুলাকার প্রোটিন গুলি জলে দ্রাব্য। | তন্তুময় প্রোটিন গুলি জলে অদ্রাব্য। |
এই প্রোটিন গুলি pH ও তাপমাত্রায় সামান্য পরিবর্তনের প্রতি সংবেদনশীল। pH ও উষ্ণতার পরিবর্তনে এর ডিনেচারেশন ঘটে। | তন্তুময় প্রোটিন গুলি তাপমাত্রা এবং pH এর মাঝারি পরিবর্তনে স্থিতিশীল থাকে। |
এই প্রোটিন গুলির জীববিদ্যা-বিষয়ক সক্রিয়তা আছে। | এই প্রোটিন গুলির জীববিদ্যা-বিষয়ক সক্রিয়তা নেই। |
7. প্রশম, আম্লিক ও ক্ষারীয় অ্যামিনো অ্যাসিড কাদের বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ- প্রশম অ্যামিনো অ্যাসিডঃ-
যেসব অ্যামিনো অ্যাসিড অণুতে একটি -NH2 এবং একটি -COOH গ্রুপ থাকে তাদের প্রশম অ্যামিনো অ্যাসিড বলে। যেমন- গ্লাইসিন (NH2-CH2-COOH), অ্যালানিন [NH2-CH(CH3)-COOH],ভ্যালিন [(CH3)2CH-CH(NH2)-COOH] ।
আম্লিক অ্যামিনো অ্যাসিডঃ- যেসব অ্যামিনো অ্যাসিড অণুতে একটি -NH2 এবং একাধিক -COOH গ্রুপ থাকে তাদের প্রশম অ্যামিনো অ্যাসিড বলে। যেমন- অ্যাসপারটিক অ্যাসিড (HOOC-CH2-CH(NH2)-COOH), গ্লূটামিক অ্যাসিড [H2N-CO-CH2CH2-CH(NH2)COOH]।
ক্ষারীয় অ্যামিনো অ্যাসিডঃ-
যেসব অ্যামিনো অ্যাসিড অণুতে একটি -COOH গ্রুপ এবং একাধিক -NH2 গ্রুপ থাকে তাদের প্রশম অ্যামিনো অ্যাসিড বলে। যেমন- লাইসিন [H2N-CH2CH2CH2CH2-CH(NH2)-COOH], হিস্টিডিন ()।
8. জুইটার আয়ন কী ? অ্যালানিনের জুইটার আয়ন গঠন দেখাও।
উত্তরঃ- অ্যামিনো অ্যাসিডের অণুতে আম্লিক (-COOH) এবং ক্ষারীয় (-NH2) উভয় গ্রুপই এক সঙ্গে থাকায় -COOH গ্রুপ থেকে একটি প্রোটন () মুক্ত হয়ে একই অণুর অন্তর্গত -NH2 গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত হয়। এর ফলে -COOH এবং -NH2 গ্রুপগুলি যথাক্রমে – COO– এবং –+NH3 গ্রুপে পরিণত হয় । অর্থাৎ অ্যামিনো অ্যাসিডের অণু একটি দ্বিমেরু আয়ন রূপে আচরণ করে। এই রকম দ্বিমেরু আয়নকেই জুইটার আয়ন বলে।
NH2-CH(CH3)-COOH ⇆ +NH3-CH(CH3)-COO–
9. সমতড়িৎ বিন্দু (Isoelectric Point) কী ?
উত্তরঃ- pH এর যে নির্দিষ্ট মানে কোনো অ্যামিনো অ্যাসিডের অণুগুলি জুইটার আয়ন রূপে অবস্থান করে এবং তড়িৎ প্রবাহ চালনা করলে তারা ক্যাথোড বা অ্যানোড কোনো তড়িদ্দবারের দিকেই গমন করতে পারে না, সেই নির্দিষ্ট pH -কে ওই অ্যামিনো অ্যাসিডের সমতড়িৎ বিন্দু বলে।
10. N- প্রান্তীয় ও C-প্রান্তীয় অ্যামিনো অ্যাসিড কাদের বলে?
উত্তরঃ- প্রতিটি পেপটাইড অণুর একপ্রান্তে একটি মুক্ত অ্যামিনো গ্রুপ এবং অন্য প্রান্তে একটি মুক্ত কার্বক্সিল গ্রুপ থাকে। পেপটাইডের যে প্রান্তে মুক্ত অ্যামিনো (-NH2) গ্রুপ থাকে, সেই প্রান্তকে N-প্রান্তীয় অ্যামিনো অ্যাসিড এবং যে প্রান্তে মুক্ত কার্বক্সিল (-COOH) গ্রুপ থাকে, সেই প্রান্তকে C- প্রান্তীয় অ্যামিনো অ্যাসিড বলে।
নিউক্লিক অ্যাসিড (Nucleic Acids)
1. নিউক্লিওসাইড কি? কী করে নিউক্লিওসাইড কে নিউক্লিওটাইডে রূপান্তরিত করবে?
উত্তরঃ- একটি নাইট্রোজেন-ঘটিত হেটারোসাইক্লিক বেস (A,G,C,U,T) এবং একটি পেন্টোজ সুগার (রাইবোজ বা ডি-অক্সিরাইবোজ) পরস্পর যুক্ত হয়ে যে যৌগ গঠন করে, তাকে নিউক্লিওসাইড বলে।
নিউক্লিওসাইডের সঙ্গে ফসফেট মূলক যুক্ত করে নিউক্লিওটাইডে রূপান্তরিত করা যায়।
নিউক্লিওসাইড + ফসফেট একক ⟶ নিউক্লিওটাইড
2. DNA এবং RNA তে অবস্থিত বেস গুলি কী কী?
উত্তরঃ- DNA এর বেসঃ অ্যাডেনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও থাইমিন।
RNA এর বেসঃ অ্যাডেনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও ইউরাসিল।
3. DNA Fingerprint কী? এর একটি ব্যবহার লেখো।
উত্তরঃ- কোনো ব্যক্তির DNA তে অবস্থিত বেসের সজ্জাক্রম নির্দিষ্ট ও এই ক্রম থেকে প্রাপ্ত তথ্যসমূহকে DNA ফিঙ্গারপ্রিণ্ট বলে। ফরেনসিক ল্যাবোরেটরীতে অপরাধীদের শনাক্তকরনের জন্য ব্যবহার হয়।
4. নিউক্লিওটাইড কি?
উত্তরঃ- একটি নাইট্রোজেন-ঘটিত হেটারোসাইক্লিক বেস (A,G,C,U,T) এবং একটি পেন্টোজ সুগার (রাইবোজ বা ডি-অক্সিরাইবোজ) ও একটি ফসফেট গ্রুপ পরস্পর যুক্ত হয়ে যে যৌগ গঠন করে, তাকে নিউক্লিওটাইড বলে।
5. DNA এবং RNA এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।
উত্তরঃ-
DNA | RNA |
পেন্টোজ সুগার হিসেবে ডি-অক্সিরাইবোজ থাকে। | পেন্টোজ সুগার হিসেবে রাইবোজ থাকে। |
নাইট্রোজেন বেস হিসেবে অ্যাডেনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও থাইমিন। | নাইট্রোজেন বেস হিসেবে অ্যাডেনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও ইউরাসিল। |
এর শৃঙ্খল দ্বিতন্ত্রী। | এর শৃঙ্খল প্রধানত একতন্ত্রী। |
বংশগতির ধারক ও বাহক। | এটি প্রোটিন সংশ্লেষে সাহায্য করে। |
এনজাইম (Enzymes), হরমোন (Hormones), লিপিড (Lipids), ভিটামিন (Vitamins)
1. এনজাইমের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তরঃ- ক) এনজাইম জীব-রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলিকে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে সম্পন্ন করে।
খ) প্রতিটি জীব-রাসায়নিক বিক্রিয়ায় একটি নির্দিষ্ট এনজাইম অনুঘটক রূপে কাজ করে।
2. রাসায়নিক গঠনের ভিত্তিতে হরমোনকে কয়ভাগে ভাগ করা যায় ও কি কি ?
উত্তরঃ- রাসায়নিক গঠনের ভিত্তিতে হরমোনকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়।
১) স্টেরয়েড ২) প্রোটিন বা পলিপেপ্টাইড ৩) অ্যামিন।
3. ভিটামিন A, D, E, K এর কাজ লেখো।
উত্তরঃ- ভিটামিন A – রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে।
ভিটামিন D – শিশুদের রিকেট রোগ প্রতিরোধ করে।
ভিটামিন E – মেয়েদের বন্ধ্যাত্ব প্রতিরোধ করে।
ভিটামিন K – রক্ত জমাট বাধঁতে সাহায্য করে।
4. ইনসুলিনের একটি ব্যবহার লেখো।
উত্তরঃ- ইনসুলিন রক্তে গ্লূকোজের মাত্রা হ্রাস করে।
5. হাইড্রোলাইজেবল লিপিড ও নন- হাইড্রোলাইজেবল লিপিডের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ- হাইড্রোলাইজেবল লিপিডঃ-
যেসব লিপিড আর্দ্রবিশ্লেষিত হয়ে ছোটো অণুতে বিয়োজিত হতে পারে, তাদের হাইড্রোলাইজেবল লিপিড বলে। যেমন- স্পারমাসিটি, সিটাইল পামিটেট।
নন- হাইড্রোলাইজেবল লিপিডঃ-
যেসব লিপিডকে আর্দ্রবিশ্লেষিত করে ছোটো অণুতে বিয়োজিত করা যায় না, তাদের নন- হাইড্রোলাইজেবল লিপিড বলে। যেমন- ভিটামিন, স্টেরয়েড।
6. হাইপারথাইরয়েডিজম কী?
উত্তরঃ- শরীরে থাইরক্সিনের মাত্রা বেড়ে গেলে গলগণ্ড রোগ হয়, একেই হাইপারথাইরয়েডিজম বলে।
7. মানবদেহে কোন স্টেরয়েডটির প্রাচুর্য বেশি?
উত্তরঃ- কোলেস্টেরল।
8. হরমোন কী ? একটি প্রোটিনধর্মী ও একটি স্টিরয়েডধর্মী হরমোনের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ- অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রাসায়নিক পদার্থ যারা রক্তস্রোতের মাধ্যমে শরীরে বিভিন্ন অঙ্গ ও টিসুতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিপাকীয় প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রন করে, তাদের হরমোন বলে।
একটি প্রোটিনধর্মী হরমোন- ইনসুলিন।
একটি স্টিরয়েডধর্মী হরমোন- টেস্টোস্টরন।
9. কোন হরমোন রক্তে গ্লূকোজের মাত্রা বৃদ্ধি করে?
উত্তরঃ- গ্লূকাগন।
10. মোম কী ?
উত্তরঃ- উচ্চ আণবিক ভরবিশিষ্ট অ্যালকোহল এবং ফ্যাটি অ্যাসিড থেকে উৎপন্ন এস্টারই হলো মোম। এগুলি সবচেয়ে সরল হাইড্রোলাইজেবল লিপিড।
11. কোন ভিটামিন অণুতে একটি সন্ধিগত মৌলের পরমানু থাকে?
উত্তরঃ- ভিটামিন B12 , সন্ধিগত মৌলটি হল কোবাল্ট (Co) ।