Last Updated on February 22, 2024 by Science Master
রাসায়নিক বন্ধন ও আণবিক গঠন (Chemical Bonding and Molecular Structure)
একাদশ শ্রেণীর রসায়ন বিষয়ের রাসায়নিক বন্ধন ও আণবিক গঠন অধ্যায়ের (Chemical Bonding and Molecular Structure) গুরুত্বপূর্ণ MCQ, VSAQ এবং SAQ প্রশ্ম ও তার উত্তর করে দেওয়া হল। যেসব ছাত্র-ছাত্রী একাদশ শ্রেণীতে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়ছে তাদের কাছে রসায়ন বিষয় একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই আমরা আসা রাখছি একাদশ শ্রেণীতে বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের এতে খুব উপকার হবে।
রাসায়নিক বন্ধন ও আণবিক গঠন অধ্যায়ের MCQ প্রশ্ম ও উত্তর (Chemical Bonding and Molecular Structure):
1.প্রদত্ত কোনটির সর্বনিন্ম বন্ধন দৈর্ঘ্য বর্তমান-
(a) O2+ (BO=2.5),
(b) O2– (BO=1.5),
(c) O2+2 (BO=3),
(d) O2-2 (BO=1)
উঃ- O2+2
2. নীচের কোনটির কেন্দ্রীয় পরমানুর সংকরায়ন অবস্থা sp3d2?
(a) SF4 ,
(b) PCl5 ,
(c) SF6 ,
(d) SO4 2-
উঃ- SF6
3. I3– আয়নে I পরমানুর সংকরায়ন অবস্থা কোনটি-
(a) sp3 ,
(b) dsp2 ,
(c) sp3d2 ,
(d) sp3d
উঃ- sp3d
4. নীচের যৌগগুলির মধ্যে কোনটি ধ্রুবীয়?
(a) CCl4 ,
(b) N2O ,
(c) CO2 ,
(d) BF3
উঃ- N2O
5. নিচের কোনটির বন্ধন দৈর্ঘ্য সর্বনিম্ন? [XI-2023]
a) O2+
b) O2
c) O2–
d) O22-
উঃ- O2+
6. কোন যৌগটি সর্বাধিক সমযোজী চরিত্র প্রদর্শন করে? [XI-2023]
a) MgCl2
b) SnCl4
c) FeCl2
d) CaCl2
উঃ- SnCl4
7.
8.
9.
10.
রাসায়নিক বন্ধন ও আণবিক গঠন অধ্যায়ের VSAQ প্রশ্ম ও উত্তর (Chemical Bonding and Molecular Structure):
1.নিন্মলিখিত যৌগগুলির সমযোজী চরিত্রের কম লেখো- LiF , LiCl , LiBr , LiI
2. তড়িৎযোজী, সমযোজী এবং অসমযোজী তিন প্রকারের বন্ধন দেখা যায় এমন একটি যৌগের উদাহরণ দাও।
উঃ- অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড (NH4Cl)
3. CO2 অণুতে C এর সংকরায়ন অবস্থানটি কী?
উঃ- sp সংকরায়িত।
4. বন্ধন দৈর্ঘ্যের ক্রম লেখো- N2 (, N2+ , N2– , N22-
উঃ- N22- (BO=2)> N2– (BO=2.5)> N2+ (BO=2.5)> N2 (BO=3)
5. দুটি বর্ধিত অষ্টক যৌগের উদাহরণ দাও। [XI-2023]
উঃ- PCl5 , SF6
6. NO3– আয়নে কেন্দ্রীয় পরমাণুর সংকরায়ন অবস্থাটি কি? [XI-2023]
উঃ- sp2
রাসায়নিক বন্ধন ও আণবিক গঠন অধ্যায়ের SAQ প্রশ্ম ও উত্তর (Chemical Bonding and Molecular Structure):
1.তড়িৎযোজী কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।
উঃ- নিকটতম নিস্ক্রিয় মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস লাভের চেষ্টায় রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী পরমানু গুলির মধ্যে ইলেকট্রনের আদানপ্রদানের ফলে উৎপন্ন বিপরীতধর্মী আয়নের মধ্যে স্থির তড়িদাকর্ষন বলের মাধ্যমে বন্ধন গঠন করে যে যৌগ উৎপন্ন হয়, তাকে তড়িৎযোজী যৌগ বলে। যেমন NaCl, KCl , CaO, CaCl2 , Na2O ইত্যাদি।
2. সমযোজী যৌগ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ- রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী একই বা ভিন্ন মৌলের পরমানু দুটির নিজ নিজ যোজ্যতা কক্ষ থেকে সমান সংখ্যাক অযুগ্ম ইলেকট্রন দ্বারা এক বা একাধিক ইলেকট্রন জোড় গঠিত হয় এবং ওইরূপ ইলেকট্রন জোড় পরমানুর নিউক্লিয়াস দ্বারা সমানভাবে ব্যবহৃত হয়ে পরমানু দুটি যে রাসায়নিক বন্ধন গঠন করে তাকে সমযোজী বন্ধন বলে এবং সমযোজী বন্ধনের মাধ্যমে সৃষ্ট যৌগকে সমযোজী যৌগ বলে। যেমন CH4, O2 , N2 , CO2 ইত্যাদি।
3. অসমযোজী যৌগ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ- রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী দুটি পরমানুর মধ্যে একটি পরমানু দুটি ইলেকট্রন (ইলেকট্রন জোড়) দান করে উভয় পরমানু ওই ইলেকট্রন জোড়টি সমভাবে ব্যবহার করে তাদের সর্ববহিস্থ কক্ষে নিস্ক্রিয় গ্যাসের ইলেকট্রন বিন্যাস ঘটিয়ে রাসায়নিক বন্ধনের মাধ্যমে যে যৌগ গঠন করে তাকে অসমযোজী যৌগ বলে। যেমন NH3→BF3 ইত্যাদি।
4. CaCl2 জলে দ্রাব্য কিন্তু CaF2 জলে অদ্রাব্য কেন?
CaCl2 জলে দ্রাব্য কিন্তু CaF2 জলে অদ্রাব্য, CaF2 এর জালক শক্তি যৌগের উপাদান আয়ন সমূহের দ্রাবকায়ন শক্তি অপেক্ষা বেশি। ফলে CaF2 জলে অদ্রাব্য। কিন্তু CaCl2 এর জালক শক্তি উপাদান আয়ন সমূহের দ্রাবকায়ন শক্তি অপেক্ষা কম। তাই CaCl2 জলে দ্রাব্য।
5. আয়নীয় ও সমযোজী যৌগের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
আয়নীয় যৌগ | সমযোজী যৌগ |
1. আয়নীয় যৌগ গুলি সাধারণত সুনির্দিষ্ট জ্যামিতিক আকার বিশিষ্ট কঠিন পদার্থ হয়। | 1. সমযোজী যৌগগুলি সাধারণত গ্যাসীয় ও তরল বা নরম কঠিন পদার্থ হয়। |
2. এদের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক বেশি হয়। | 2. এদের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক অপেক্ষাকৃত কম হয়। |
3. এরা ধ্রুবীয় দ্রাবকে দ্রবীভূত হয় কিন্তু অধ্রুবীয় দ্রাবকে দ্রবীভূত হতে পারে না। | 3. এরা অধ্রুবীয় দ্রাবকে দ্রবীভূত হতে পারে কিন্তু ধ্রুবীয় দ্রাবকে দ্রবীভূত হয় না। |
4. কঠিন অবস্থায় তড়িৎযোজী যৌগ তড়িৎ পরিবহণ করে না, কিন্তু গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় এরা তড়িৎ পরিবহণ করে। | 4. এরা গলিত বা দ্রবীভূত কোনো অবস্থাতেই তড়িৎ পরিবহণ করে না। |
6. অষ্টক সূত্রের ব্যতিক্রম দেখায় এমন দুটি যৌগের উদাহরন দাও।
উঃ- অসম্পূর্ণ ইলেকট্রন অষ্টকঃ BF3 , BeF2
অষ্টক সূত্রের সম্প্রসারনঃ PCl5 , SF6
7. সিগমা (σ) বন্ধন ও পাই (π) বন্ধন কাকে বলে?
উঃ- সিগমা (σ) বন্ধনঃ দুটি পারমাণবিক কক্ষকের মুখোমুখি বা মাথায় মাথায় অভিলেপনের ফলে যে সমযোজী বন্ধনের সৃষ্টি হয় তাকে সিগমা (σ) বন্ধন বলে।
s-s , s-px এবং px-px এর মধ্যে সিগমা (σ) বন্ধন গঠিত হয়।
পাই (π) বন্ধনঃ সিগমা (σ) বন্ধনঃ দুটি পারমাণবিক কক্ষকের পাশাপাশি অভিলেপনের ফলে যে সমযোজী বন্ধনের সৃষ্টি হয় তাকে পাই (π) বন্ধন বলে।
py-py , pz-pz এবং py-pz এর মধ্যে পাই (π) বন্ধন গঠিত হয়।
8. সিগমা (σ) বন্ধন ও পাই (π) বন্ধনের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
সিগমা (σ) বন্ধন | পাই (π) বন্ধন |
1. দুটি একক ইলেকট্রন সমন্বিত কক্ষকের অক্ষ বরাবর অভিলেপনের ফলে সিগমা (σ) বন্ধন গঠিত হয়। | 1. দুটি একক ইলেকট্রন সমন্বিত কক্ষকের পাশাপাশি অভিলেপনের ফলে পাই (π) বন্ধন গঠিত হয়। |
2. s-s , s-pz , pz-pz প্রভৃতি কক্ষকের অভিলেপনের দ্বারা সিগমা (σ) বন্ধন তৈরী হয়। | 2. px-px , py-py কক্ষকের অভিলেপনের দ্বারা পাই (π) বন্ধন তৈরী হয়। |
3. σ-বন্ধন তুলনামূলকভাবে অধিক শক্তিশালী হয়। | 3. π-বন্ধন σ-বন্ধনের তুলনায় দূর্বল হয়। |
4. σ-বন্ধনের ইলেকট্রন ঘনত্ব থাকে বন্ধন অক্ষ বরাবর সিলিন্ডারের মতো। | 4. π- বন্ধনের ইলেকট্রন ঘনত্ব থাকে বন্ধন অক্ষের উপর ও তলদেশ বরাবর। |
5. σ-বন্ধন কম সক্রিয় হয়। | 5. π-বন্ধন বেশি সক্রিয় হয়। |
6. কোনো অণুর আকৃতি, ওর মধ্যে অবস্থিত σ-বন্ধনের সংখ্যা দ্বারা ঠিক হয়। | 6. অণুর আকৃতি গঠনে π- বন্ধনের কোনো ভূমিকা নেই। |
7. σ-বন্ধনে অংশগ্রহণকারী পরমানুগুলির মুক্ত ঘূর্ণন সম্ভব। | 7. π- বন্ধনে অংশগ্রহণকারী পরমানুগুলির মুক্ত ঘূর্ণন সম্ভব নয়। |
9. কেন্দ্রীয় পরমানুর সংকরায়ন অবস্থা নির্ণয়ের সমীকরণটি লেখো।
উঃ- V= কেন্দ্রীয় পরমানুর যোজ্যতা কক্ষে উপস্থিত মোট ইলেকট্রন সংখ্যা
X= একযোজী পরমানুর সংখ্যা , C = ক্যাটায়নের সংখ্যা , A= অ্যানায়নের সংখ্যা।
H=\frac{1}{2}[V+X-C+A]
নিচের টেবিলে H এর মান, কেন্দ্রীয় পরমানুর সংকরায়ন অবস্থা ও গঠনাকৃতি দেওয়া হলো।
H এর মান | সংকরায়ন | গঠনাকৃতি |
2 | sp | সরলরৈখিক |
3 | sp2 | ত্রিকোণীয় সমতলীয় |
4 | sp3 | চতুস্তলকীয় |
5 | sp3d | ত্রিকোণীয় দ্বি-পিরামিডীয় |
6 | sp3d2 | অষ্টতলকীয় |
8 | sp3d3 | পঞ্চকোণীয় দ্বি-পিরামিডীয় |
10. দ্বিমেরু ভ্রামক (Dipole Moment) কাকে বলে? এর CGS এবং SI একক কি?
কোনো ধ্রবীয় অণুর পজেটিভ বা নেগেটিভ কেন্দ্রের চার্জ e এবং কেন্দ্র দুটির মধ্যে দূরত্ব d এর গুণফলকে ওই অণুর দ্বিমেরু ভ্রামক বা ডাইপোল মোমেন্ট (μ) বলে।
দ্বিমেরু ভ্রামক বা ডাইপোল মোমেন্ট (μ) = e X d
এর CGS একক ডিবাই (D) এবং SI একক কুলম্ব. মিটার (C.m)
1 D = 10-18 esu
11. SO2 ধ্রুবীয়, কিন্তু CO2 অধ্রুবীয় কেন?
উঃ- SO2 অণুর কেন্দ্রীয় S পরমানুটি sp2 সংকরায়িত। S পরমানুতে একটি নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন জোড় থাকে। S=O বন্ধন ধ্রুবীয় হওয়ায় দুটি S=O বন্ধনের লব্ধি নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন জোড়ের ভ্রামকের বিপরীত দিকে ক্রিয়া করে এবং S=O বন্ধন দুটির ভ্রামকের লব্ধি নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন জোড়ের ভ্রামক অপেক্ষা বেশি হওয়ায় SO2 এর সামগ্রিক ভাবে দ্বিমেরু ভ্রামক থাকে এবং তাই SO2 ধ্রুবীয় হয়।
অন্যদিকে CO2 অণুর কেন্দ্রীয় C পরমানুটি sp সংকরায়িত এবং এর অণুর গঠন সরলরৈখিক। দুটি C=O বন্ধনের ভ্রামক পরস্পর সমান ও বিপরীতমুখী হওয়ায় এর কোনো দ্বিমেরু ভ্রামক থাকে না। তাই CO2 অধ্রুবীয় হয়।
12. CCl4 অণুর দ্বিমেরু ভ্রামক শূন্য হয় কেন? অথবা, C-Cl বন্ধনটি ধ্রুবীয় হওয়া সত্বেও CCl4 যৌগটি অধ্রুবীয় কেন?
উঃ- CCl4 অণুর কেন্দ্রীয় কার্বন পরমানুটি sp3 সংকরায়িত এবং এর অণুর গঠন চতুস্তলকীয়। CCl4 অণুর চারটি C-Cl বন্ধনের মধ্যে তিনটি C-Cl বন্ধন ভ্রামকের লব্ধি চতুর্থ C-Cl বন্ধন ভ্রামকের সমান ও বিপরীত হওয়ায় CCl4 অণুর দ্বিমেরু ভ্রামক শূন্য হয় এবং এটি অধ্রুবীয় হয়।
13. CO2 এবং N2O উভয়ই সরলরৈখিক অণু । কিন্তু CO2 অধ্রুবীয় এবং N2O ধ্রুবীয়। কারন ব্যাখ্যা করো।
উঃ- CO2 এবং N2O এর অণুর গঠন-
CO2 এর গঠন সরলরৈখিক। দুটি C=O বন্ধন ভ্রামক পরস্পর সমান ও বিপরীত হওয়ায় লব্ধি ভ্রামক শূন্য হয়, ফলে CO2 অণু অধ্রুবীয় হয়।
N2O তে একটি N→O বন্ধন ভ্রামক আছে এবং এর লব্ধি ভ্রামক শূন্য হয় না, ফলে N2O ধ্রুবীয় হয়।
[আরও দেখুনঃ পদার্থের গ্যাসীয় ও তরল অবস্থা অধ্যায়ের প্রশ্ম-উত্তর। ]
14. হাইড্রোজেন বন্ধন কাকে বলে?
কোনো একটি উচ্চ তড়িৎ-ঋণাত্মক মৌলের পরমানুর (F, O, N) সঙ্গে সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ H- পরমানু অপর একটি একই বা ভিন্ন তড়িৎ- ঋণাত্মক মৌলের পরমানুর সঙ্গে স্থির তড়িৎ আকর্ষন বলে আবদ্ধ হয়ে যে দুর্বল আয়নীয় প্রকৃতির বন্ধন গঠিত হয় তাকে হাইড্রোজেন বন্ধন (H-বন্ধন) বলে।
15. আন্তঃআণবিক হাইড্রোজেন বন্ধন কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ- একই বা ভিন্ন যৌগের একাধিক অণুর মধ্যে গঠিত হাইড্রোজেন বন্ধনকে আন্তঃআণবিক হাইড্রোজেন বন্ধন বলে।
16. অন্তঃআণবিক হাইড্রোজেন বন্ধন কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
একই অণুর মধ্যে গঠিত হাইড্রোজেন বন্ধনকে অন্তঃআণবিক হাইড্রোজেন বন্ধন বলে।
17. SnCl2 আয়নীয় যৌগ কিন্তু SnCl4 সমযোজী যৌগ কেন?
উঃ- ফাজানের সূত্রানুসারে ক্যাটায়নের চার্জ বৃদ্ধি পেলে ক্যাটায়ন অ্যানায়নকে বেশি পরিমানে পোলারাইজ করে। ফলে যৌগে সমযোজী চরিত্রের পরিমান বৃদ্ধি পায়। SnCl2 ও SnCl4 যৌগে Sn এর চার্জ যথাক্রমে +4 ও +2। তাই SnCl4 সমযোজী যৌগ। অপর পক্ষে SnCl2 যৌগে Sn এর চার্জ কম হওয়ায় এটি আয়নীয় যৌগ।
18. H2O তরল কিন্তু H2S গ্যাসীয় কেন? অথবা, H2O এর স্ফুটনাঙ্ক H2S অপেক্ষা বেশি হয় কেন?
উঃ- অক্সিজেন ও সালফার পর্যায় সারণীর একই শ্রেণীভূক্ত হলেও অক্সিজেনের তড়িৎ ঋণাত্মকতা সালফার অপেক্ষা বেশি এবং পরমানুর আকার সালফার পরমানুর আকার অপেক্ষা কম। সেইজন্য জলের অণুর অক্সিজেন আন্তঃআণবিক হাইড্রোজেন বন্ধন গঠন করে এবং অসংখ্য জলের অণু সংযোজিত অবস্থায় থাকে। তাই সাধারন তাপমাত্রায় জল তরল এবং এর স্ফুটনাঙ্কও বেশি হয়।
19. KHF2 লবণ গঠিত হয় কিন্তু KHCl2 লবণের অস্তিত্ব নেই কেন?
উঃ- ফ্লোরিন পরমানুর ক্ষুদ্র আকার ও সর্বোচ্চ তড়িৎ ঋণাত্মকতার জন্য H-F বন্ধন খুব ধ্রুবীয় হয়। ফলে KF আয়নীয় যৌগের F- আয়নের সঙ্গে H-F অণুর H পরমানু H-বন্ধন গঠন করে বাইফ্লোরাইড আয়ন (HF2–) গঠন করে যা K+ আয়নের সঙ্গে যুক্ত হয়ে KHF2 লবণ গঠন করে।
অপরদিকে, Cl মৌল কম তড়িৎ ঋণাত্মক ও সেটির পরমানুর আকার বড়ো হওয়ায় KCl আয়নীয় যৌগের Cl– আয়নের সঙ্গে H-Cl অণুর H পরমানু H-বন্ধনের মাধ্যমে HCl2– আয়ন উৎপন্ন করতে পারে না। এরজন্য KHCl2 লবণ গঠিত হয় না।
20. He2 অণু গঠিত হয় না কেন?
উঃ- He এর ইলেকট্রন বিন্যাস 1s2
He_2\; এর \;বন্ধন\; ক্রম = \frac{N_b-N_a}{2} = \frac{2-2}{2} =0
He2 অণুর বন্ধন ক্রম শূন্য হওয়ায় He2 গঠিত হয় না।
21. অর্থো- নাইট্রোফেনল অপেক্ষা প্যারা নাইট্রোফেনলের স্ফুটনাঙ্ক বেশি কেন ? [XI-2023]
উঃ- অর্থো- নাইট্রোফেনলের অনুতে -OH এবং -NO2 গ্রুপ দুটি বেঞ্জিন বলয়ের পাশাপাশি অবস্থান করে বলে -OH এবং -NO2 গ্রুপের মধ্যে অন্ত:আণবিক H- বন্ধন গঠিত হয়। ফলে অর্থো-নাইট্রোফেনল বিচ্ছিন্ন বা একক অনুরূপে অবস্থান করে। তাই অর্থো-নাইট্রোফেনলের স্ফুটনাঙ্ক কম হয়। অন্যদিকে প্যারা নাইট্রোফেনলের-NO2 এবং -OH গ্রুপ দূরে অবস্থান করার জন্য অন্তঃআণবিক H- বন্ধন গঠিত হয় না। কিন্তু প্যারা- নাইট্রোফেনলের অনুগুলির পরস্পরের সঙ্গে আন্তঃআণবিক H- বন্ধন এর মাধ্যমে সংগুণিত থাকে। তাই প্যারা- নাইট্রোফেনলের স্ফুটনাঙ্ক অনেক বেশি হয়।
[আরও দেখুনঃ পরমানুর গঠন অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ম-উত্তর। ]
22. NH3 এবং H2O অনুর কেন্দ্রীয় পরমাণুর সংকরায়ন অবস্থা একই হলেও বন্ধন কোণের মান ভিন্ন হয় কেন? [XI-2023]
উঃ- NH3 এবং H2O অনুর কেন্দ্রীয় পরমাণুর সংকরায়ন অবস্থা sp3 । NH3 অণুতে তিনটি বন্ধন ইলেকট্রন জোড় এবং একটি নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন জোড় আছে। নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন জোড় (lp) ও N-H বন্ধন জোড় গুলির (bp) মধ্যে বিকর্ষণ বলের মান অপেক্ষা বেশি অর্থাৎ, lp-bp ( বিকর্ষণ) > bp-bp ( বিকর্ষণ) হওয়ায় NH3 অণুর চতুস্থলকীয় আকৃতির বিকৃতির ঘটে এবং বন্ধন কোণের মান কমে 107o হয়।
অন্যদিকে, H2O অনুর কেন্দ্রীয় O পরমাণুতে দুটি O-H বন্ধন ইলেকট্রন জোড় (bp) এবং দুটি নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন জোড় (lp) আছে। lp-lp > lp-bp > bp-bp হওয়ায় H2O অণুর গঠন চতুস্থলকের পরিবর্তে V আকৃতির হয় এবং বন্ধন কোণের মান 104o হয়।
23. PbCl4 এর অস্তিত্ব আছে কিন্তু PbI4 এর অস্তিত্ব নেই- ব্যাখ্যা করো। [XI-2023]
উঃ- কোন যৌগে ক্যাটায়ন কর্তৃক অ্যানায়নের বিকৃতি বা ধ্রুবায়ন বেশি হলে যৌগটির মধ্যে সমযোজী চরিত্র বাড়ে। কিন্তু ধ্রুবায়নের এই মান একটি নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করলে, অ্যানায়নটি জারিত হয়। ফলে যৌগটির আর উচ্চতর জারণ অবস্থা দেখা যায় না। এখন PbI4 যৌগের উচ্চ ধনাত্মক আধানযুক্ত Pb4+ এর ধ্রবায়ন ক্ষমতা ও বড়ো আকার যুক্ত I– এর ধ্রুবায়িত হওয়ার ক্ষমতা উভয়ই বেশি। ফলে তাদের মধ্যে ধ্রুবায়ন এত বেশি ঘটে যে, I– আয়ন Pb4+ দ্বারা জরিত হয়ে I2 তে পরিণত হয়। তাই PbI4 এর অস্তিত্ব নেই। অপরদিকে PbCl4 অণুতে Cl– এর আকার I– অপেক্ষা ছোট হওয়ায়, এক্ষেত্রে ধ্রুবায়নের মাত্রা অপেক্ষাকৃত কম।
➤ আমাদের পোষ্টের লেটেস্ট আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ ফলো করুন এবং টেলিগ্রাম চ্যানেল জয়েন করুন।
Latest Posts:
- সপ্তম শ্রেণীর পরিবেশ বিজ্ঞান – তাপ (প্রথম অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর | Class 7 Poribesh O Bigyan Heat Chapter
- বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ-মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান | Life Science Chapter 3
- মাধ্যমিক পরীক্ষার রুটিন ২০২৫ | Madhyamik Exam Routine 2025 pdf Download
- মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান-জীবনের প্রবাহমানতা প্রশ্ম-উত্তর Madhyamik Life Science Chapter 2
- {pdf} WBBSE Holiday List 2025 | মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ছুটির তালিকা ২০২৫